শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:২২ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন-পরবর্তী বিক্ষোভ ও সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রতায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশটি। অ্যারিজোনার ভোট গণনা কেন্দ্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের সশস্ত্র হামলার পর ভোট গণনা বন্ধ করা হয়। এছাড়া দাঙ্গা পরিস্থিতির মুখে পোর্টল্যান্ডে ন্যাশনাল গার্ড নামানো হয়। নিউইয়র্ক, শিকাগো ও ফিলাডেলফিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করেন। নিউইয়র্কের ম্যানহাটন, ওরিগনের পোর্টল্যান্ডসহ বিভিন্ন শহরের বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর অবস্থানে যায় প্রশাসন। নিউইয়র্ক ও পোর্টল্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ানের।
ফল প্রকাশের আগেই ভোট গণনা বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের মামলার জেরে ছড়ায় উত্তাপ। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, শিকাগো, মিনেসোটা, ফিলাডেলফিয়াতে বিক্ষোভ হয়েছে। অ্যারিজোনার মেরিকোপা কাউন্টির একটি ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে রিপাবলিকান সমর্থকদের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ফলে ভোট গণনা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ট্রাম্পের পক্ষে পড়া ভোট গণনা করা হবে না- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়ার পর ট্রাম্পের সমর্থকরা ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেয়। ভোটকেন্দ্রে ট্রাম্পের কয়েকজন সমর্থক অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এরপর কর্তৃপক্ষ ভোট গণনা বন্ধ রাখেন।
গুরুত্বপূর্ণ নেভাদা রাজ্যেও ট্রাম্পের সশস্ত্র সমর্থকরা গণ্ডগোল করেছে বলে জানা গেছে। ম্যানহাটনের ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কে ভোট গণনার দাবিতে কয়েকশ’ মানুষ বিক্ষোভ করার পর গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। সেখানে প্রতিবাদ-সমাবেশ করে কয়েকশ’ মানুষ। পুলিশ বলছে, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করা এবং দোকানের কাচ ভেঙে ফেলার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়। একজনের কাছ থেকে চাকু ও অন্যজনের কাছ থেকে বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। নিউইয়র্ক পুলিশ এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের মারমুখী কিছু ছবি প্রকাশ করে বলেছে, প্রত্যেকের মতপ্রকাশের ব্যাপারে আমাদের সমর্থন আছে। কিন্তু আগুন জ্বালিয়ে অন্যদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়ার বিষয়টি মেনে নেয়া হবে না। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ এবং সহিংসতার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিউইয়র্কে নির্বাচন-পরবর্তী বিক্ষোভের নামে আবর্জনায় আগুন জ্বালানোর অভিযোগে ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতিটি ভোট গণনার দাবিতে আয়োজিত নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে হাজারও মানুষের নির্বাচনী শোভাযাত্রা সহিংস রূপ নেয়।
সুইং স্টেটগুলোয় ভোট গণনা নিয়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যেই বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। ওরেগন রাজ্যের পোর্টল্যান্ডে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভকারীরা প্রত্যেকটি ভোট গণনার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সেখানে সহিংসতা দেখা দিলে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা হস্তক্ষেপ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীদের মূল দল থেকে একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে শহরের কেন্দ্রস্থলে গিয়ে দোকানের জানালা ভাংচুর করে। এ ঘটনাকে দাঙ্গা বলে অভিহিত করেছে পুলিশ। এখান থেকে ১১ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি পুলিশ পটকা, হাতুড়ি ও রাইফেল জব্দ করে। মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিসে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী প্রধান সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।
বাইডেনপন্থী বিক্ষোভকারীরা বলেন, ট্রাম্প যেরূপ আমেরিকা চান, আমরা তেমনটা চাই না। আমরা প্রত্যেকের জন্য সমতা চাই, সমান অধিকার আর সমান সুযোগ। ফ্যাসিবাদী প্রেসিডেন্ট অভ্যুত্থানের সুযোগ খুঁজছেন। তাকে রুখতে রাজপথে নেমেছি। দেশের এ সংকটে প্রতিটি ভোট গোনার বিকল্প নেই। আমাদের দেশ এক দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ভোট চুরি হতে দিলে ভয়ঙ্করভাবে তার ফল ভোগ করতে হবে দেশের প্রতিটি মানুষকে। কিছু মানবাধিকার সংগঠনও ট্রাম্পের অন্যায্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এলা বেকার সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের সংগঠক জোস বার্নাল বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে কী ঘটতে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থেকে নিজেদের সব শক্তি ঢেলে দেব|
Leave a Reply