বৈধ বারেও ঢুকছে অবৈধ মদ - বঙ্গ সমাচার বৈধ বারেও ঢুকছে অবৈধ মদ - বঙ্গ সমাচার

শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৭:২৬ অপরাহ্ন

জরুরী বিজ্ঞপ্তি :
জেলা ভিত্তিক প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আমাদের পরিবারে যুক্ত হতে আপনার সিভি পাঠিয়ে দিন bongosamacharnews@gmail.com এই ঠিকানায়। বিজ্ঞাপনের জন্য  ইমেইল করুন bongosamacharnews@gmail.com এই ঠিকানায়।

বৈধ বারেও ঢুকছে অবৈধ মদ

অনলাইন ডেস্ক :

রাজধানীর উত্তরায় লেকভিউ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানের পর ৪৫৮ বোতল বিদেশি মদ ও এক হাজার ৮৩ ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, জব্দ মদের প্রায় পুরোটা অবৈধভাবে ওই বারে ঢুকেছে। গত এক বছরে লেকভিউ রেস্টুরেন্ট পর্যটন করপোরেশন থেকে সরকারি নিয়ম মেনে এক বোতল মদও ক্রয় করেনি। এখন প্রশ্ন উঠেছে- তাহলে উত্তরার ওই বারে এত বিদেশি মদ এলো কীভাবে। একাধিক সূত্র বলছে, রাজস্ব ফাঁকি দিতে ঢাকার অনেক বার অবৈধ পন্থায় মদ কিনছে। যদিও ডিবির অভিযানের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা দাবি করে আসছেন, বৈধ ওই বারের মদ পর্যটন করপোরেশন থেকে কেনা হয়েছিল। মাদক আইনের ২৩ ধারার উল্লেখ করে তাঁরা পুলিশের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

ডিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, লেকভিউ বারের মদের উৎস খতিয়ে দেখতে গতকাল তাঁরা পর্যটন করপোরেশনের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেন। এতে দেখা যায়, ১৪ মাস আগে পর্যটন করপোরেশন থেকে ৫৪০ বোতল মদ কিনেছিল লেকভিউ বার কর্তৃপক্ষ। একই সময় তারা বিদেশি বিয়ার কিনেছে ১ হাজার ৮৩ ক্যান। যদিও প্রতি মাসে শত শত গ্রাহকের কাছে মদ বিক্রি করেছে তারা। জব্দ মদ আর ১৪ মাস আগে কেনা মদের হিসাব বিশ্নেষণ করলে দেখা যায়, এই সময়ে তারা বৈধভাবে কেনা মাত্র ৮২ বোতল মদ ও ১১৭ ক্যান বিয়ার বিক্রি করেছে! এ ছাড়া একই প্রতিষ্ঠানের মিরপুর ও গুলশানের আরেকটি বারের নামে বৈধভাবে কোনো মদ কেনার নথিপত্র পাওয়া যায়নি। রাজধানীতে অন্তত ১৩০টি বারের অনুমোদন আছে বলে জানা যায়।

এ ব্যাপারে লেকভিউ বারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তার হোসেনকে একাধিকবার তাঁর ফোনে কল করে ব্যস্ত পাওয়া যায়।

ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কোনো জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ বা অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হলে পুলিশ যে কোনো সময় অভিযান চালাতে পারে। সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লেকভিউ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে অভিযান সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, কারা তল্লাশি করবেন বা করবেন না।’ পুলিশ প্রয়োজনে যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারে। অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হলে পুলিশ অভিযান বা তল্লাশি চালাতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ডিএনসির এক কর্মকর্তা বলেন, বৈধ বারে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা কিংবা অপরাধ সংঘটিত হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে যেতে পারে। কিন্তু বারের লাইসেন্স সংক্রান্ত বা মদের কাগজপত্র যাচাইয়ে অভিযানে যাওয়ার কোনো বিধান নেই। তবে অভিযানে যেতে হলে ডিএনসির সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করতে হবে আগে থেকে। উত্তরার লেকভিউ বারে অভিযানে ডিবি অভিযান বিষয়ে ডিএনসির কাউকে অবহিত করেনি।

সংশ্নিষ্টরা বলছেন, ঢাকায় যাঁরা বার পরিচালনা করেন তাঁরা নানা জায়গায় মাসোহারা দেন। অনেকের পেছনে রয়েছেন রাঘববোয়াল। অবৈধভাবে মদ সংগ্রহ ছাড়াও গ্রাহকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে তাঁরা কোনো নিয়ম মানার তোয়াক্কা করেন না।

বৃহস্পতিবার উত্তরা ও গুলশানে দুটি বারে অভিযান চালিয়ে ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় দুটি মামলায় হয়েছে। দুই মামলার প্রধান আসামি কিংফিশারের কর্ণধার মুক্তার হোসেন। তবে এখনও তিনি গ্রেপ্তার হননি।

এদিকে অভিযানের পর রাজধানীর একাধিক বারের অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্যের বিষয়টি সামনে এসেছে। মদপানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া লাগে, কিন্তু বিভিন্ন বারে বসে মদ পান করা যায় বাধাহীনভাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পূর্বানুমতি ব্যাতিত এই সাইটের কোন লেখা, ছবি বা ভিডিও ব্যাবহার করা নিষিদ্ধ।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com