সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক :
বন্যার শুরু থেকে বিদ্যালয়ের চারদিকে থৈ থৈ পানি। বর্তমানেও শ্রেণিকক্ষে তিন ফুটের মতো পানি রয়েছে। পানির কারণে বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও ক্লাস নেওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাই শিক্ষার্থী ক্লাস করছেন বাড়ির আঙিনায়।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাসে অংশ নিতে পেরে খুব খুশি।
সরেজমিন দেখা যায়, রোববার প্রথম দিনে উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস ছিল। এতদিন পর বিদ্যালয় খোলার আনন্দে অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত হয়েছে বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১১০ শিক্ষার্থী রয়েছে। দীর্ঘদিন পর ক্লাস শুরু হলেও প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে। ক্লাসে সরাসরি অংশ নিতে পেরে শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল উৎফুল্লতার ছোঁয়া।
এতদিন পর ক্লাস শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে পারেনি। বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঠাঁই হয় বিদ্যালয়ের জমিদাতা নজির হোসেনের বাড়ির উঠানে। প্রচণ্ড গরমে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই চলে শিক্ষা কার্যক্রম।
এ ছাড়া উপজেলার মাইজখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মটেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচতলায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় দোতলায় শিক্ষাকার্যক্রম চলে বলে জানা গেছে।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী নিলুফা আক্তার বলেন, অনেক দিন পর ক্লাস করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। তবে আমাদের রঙিন স্কুলে ক্লাস করতে পারলে আরও বেশি ভালো লাগত। বন্যার কারণে আমাদের স্কুলে অনেক পানি। দীর্ঘদিন পর অনেক বন্ধু একসঙ্গে ক্লাস করতে পেরেছি।
শিক্ষক মো. আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, বন্যার কারণে আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে ক্লাস নিতে পারছি না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করেছি। তবে জায়গা না থাকায় শিক্ষার্থীদের বসতে কষ্ট হয়েছে। প্রচণ্ড গরমেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পুরো এলাকাতেই পানি থাকায় দূর থেকে নৌকায় স্কুলে যেতে হয়। শুকনো মৌসুমেও কাদার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সব মিলিয়ে হতাশার মধ্যে আছি।
এ বিষয়ে রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা আক্তার পপি বলেন, স্বাভাবিক বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি থাকায় তিন মাস আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে সমস্যা হয়। বিদ্যালয়ের ভবনটি দোতলাবিশিষ্ট হলে আমাদের জন্য ভালো হয়। বর্তমান সময়ে একটি বাড়ির উঠানে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সনানন্দ পাল বলেন, উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাশড়া, মাইজখাড়া ও মটেশ্বর বিদ্যালয়ে এখনও পানি রয়েছে। রাশড়া এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় ও বিদ্যালয়ে দোতলা ভবন না থাকায় একটি বাড়ির উঠানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। মাইজখাড়া ও মটেশ্বর বিদ্যালয়ে দোতলা ভবনে ক্লাস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
Leave a Reply