লজ্জায়-নিরানন্দে শেষ হলো আমেরিকার দীর্ঘ যুদ্ধ - বঙ্গ সমাচার লজ্জায়-নিরানন্দে শেষ হলো আমেরিকার দীর্ঘ যুদ্ধ - বঙ্গ সমাচার

মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন

জরুরী বিজ্ঞপ্তি :
জেলা ভিত্তিক প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আমাদের পরিবারে যুক্ত হতে আপনার সিভি পাঠিয়ে দিন bongosamacharnews@gmail.com এই ঠিকানায়। বিজ্ঞাপনের জন্য  ইমেইল করুন bongosamacharnews@gmail.com এই ঠিকানায়।

লজ্জায়-নিরানন্দে শেষ হলো আমেরিকার দীর্ঘ যুদ্ধ

অনলাইন ডেস্ক :

এসেছিল বিজয়ীর বেশে। উৎখাত করেছিল অত্যাচারী শাসক তালেবানকে। দেখিয়েছিল মুক্তির স্বপ্ন, সুখ আর স্বাচ্ছন্দ্যের। কথা দিয়েছিল সব সময় পাশে থাকার।

নতুন করে বাঁচার আশায় বুক বেঁধেছিল কোটি আফগান। কিন্তু কথা রাখল না যুক্তরাষ্ট্র। অবশেষে তাদের দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে গেল।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের অবসান ঘটেছে। তবে সেটা ঘটেছে রাতের আঁধারে। লজ্জায় আর নিরানন্দে। কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যদিয়ে তড়িঘড়ি পলায়নের মাধ্যমে।

সোমবার মধ্য রাতের পর, ৩১ আগস্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই বিমানবন্দর থেকে আকাশে ডানা মেলে সর্বশেষ মার্কিন সামরিক বিমান সি-১৭। দিনটিকে ঐতিহাসিক বিজয়ের মুহূর্ত হিসেবে আখ্যা দিয়ে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করছে তালেবান।

সকালেই বিমানবন্দরে হাজির হন তালেবান নেতারা। বিমানবন্দরের টারম্যাকে দাঁড়িয়ে তালেবানের বিজয় ঘোষণা করেন সংগঠনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। সিনিয়র এই তালেবান নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমেরিকার পরাজয় অন্যান্য আগ্রাসী শক্তির জন্য একটা বড় শিক্ষা।

ভবিষ্যতে কেউ আফগানিস্তান দখল করার চিন্তা করলে তাদেরও এই হাল হবে।’ রাজধানীজুড়ে মুহুর্মুহু বন্দুকের গুলির আওয়াজের মধ্যে তালেবানের শীর্ষ নেতা নেতা আনাস হাক্কানি বলেন, ‘আমরা আবার ইতিহাস গড়েছি। আমরা লড়াইয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ২০ বছরের দখলদারির অবসান ঘটিয়েছি।’

বিবিসি বলছে, তালেবান বিজয়োল্লাস করলেও ভয় ও অনিশ্চয়তার গভীরে তলিয়ে যাচ্ছে সাধারণ আফগানরা। ৪০ বছর ধরে যুদ্ধ চলার পরও আফগান জনগণ আজকের মতো এতটা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েননি। তাদের জীবন এতটা অন্ধকারে ঢেকে যায়নি।

ভবিষ্যতে তাদের জীবনে কী ঘটবে তা বলা খুবই কঠিন। যেসব আফগান দেশ ত্যাগ করতে পেরেছেন, তারা ভাবছেন আবার কোনো দিন কি তারা ফিরতে পারবেন? আর যে চার কোটি আফগান দেশে রয়ে গেছেন আগামী দিনগুলোতে তালেবান শাসনের কী রূপ তারা দেখতে পাবেন তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এভাবে সটকে পড়া জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইরত আফগান নাগরিকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতারও শামিল। ওয়াশিংটনের এ সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ আফগানদের বিশাল একটি অংশ চরম বিপদে পড়েছে। অনেকেই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলে দলে দেশ ছাড়া এবং কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ হামলা থেকেই বিষয়টি স্পষ্ট।

এদিকে আফগানিস্তানে নতুন তালেবান সরকারের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে এই আহ্বান জানান দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আফগানিস্তানের নতুন তালেবান শাসকদের সঙ্গে কাজ করা এবং তাদেরকে ইতিবাচক দিকনির্দেশনা দেওয়া।’ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স। চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের আমন্ত্রণে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ওই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওয়াং ব্লিনকেনকে বলেন, ‘আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান, নতুন সরকারকে সরকারি কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে চালাতে সাহায্য করা, সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, মুদ্রার অবমূল্যায়ন বন্ধ করা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কাজ করা উচিত।

ওয়াং জানান, আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত দ্বিমুখী নীতি বা ‘বাছাইকৃত’ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিবর্তে দেশটিকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় এবং সহিংসতা বন্ধে সাহায্য করা। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘দ্রুত প্রত্যাহার’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ‘পুনর্গঠিত’ এবং শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে সাহায্য করতে পারে।

মার্কিন অস্ত্র ফেরত না দিলে বোমা হামলার আহ্বান ট্রাম্পের : তালেবান মার্কিন যুদ্ধসরঞ্জাম ফিরিয়ে দিতে রাজি না হলে আফগানিস্তানে ফের বোমা হামলা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।

সাবেক মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট আফগানিস্তানে ফেলে আসা যুক্তরাষ্ট্রের সব যুদ্ধসরঞ্জাম ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন সোমবার। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শেষের পর ট্রাম্প এক ই-মেইল বার্তায় এসব কথা বলেন।দ্য হিল ডটকম।

ট্রাম্প বিবৃতিতে বলেন, ইতিহাসে এমন খারাপ অবস্থায় কখনো সেনা প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনাকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনের চরম অযোগ্যতা ও ব্যর্থতা বলে বর্ণনা করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পূর্বানুমতি ব্যাতিত এই সাইটের কোন লেখা, ছবি বা ভিডিও ব্যাবহার করা নিষিদ্ধ।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com